ক্যান্সারের রোগী কতদিন বাঁচে?

Estimated read time 1 min read

ক্যান্সারের রোগী কতদিন বাঁচবে তা নির্ভর করে বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর, যেমন:

  1. ক্যান্সারের ধরণ – কিছু ক্যান্সার (যেমন স্তন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার) দ্রুত চিকিৎসা নিলে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেশি, কিন্তু কিছু ক্যান্সার (যেমন অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার) তুলনামূলকভাবে বেশি মারাত্মক হতে পারে।
  2. ক্যান্সারের স্টেজ (পর্যায়)
    • প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে (Stage 1 বা 2) চিকিৎসার মাধ্যমে দীর্ঘদিন বাঁচা সম্ভব।
    • উন্নত পর্যায়ে (Stage 3 বা 4) ধরা পড়লে রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কমে যায়।
  3. চিকিৎসার ধরণ ও প্রতিক্রিয়া
    • সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি, ইমিউনোথেরাপি ইত্যাদি ক্যান্সারের ধরণ অনুযায়ী জীবনকাল বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
    • কিছু রোগী চিকিৎসার পর ভালোভাবে সুস্থ থাকেন, আবার কারও ক্ষেত্রে ক্যান্সার ফিরে আসতে পারে।
  4. রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অবস্থা – যদি রোগীর শরীর সুস্থ থাকে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হয়, তবে তিনি দীর্ঘদিন বাঁচতে পারেন।
  5. জীবনযাত্রার মান ও খাদ্যাভ্যাস – স্বাস্থ্যকর খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ কমানো ইত্যাদি রোগীর আয়ুষ্কাল বাড়াতে পারে।

গড়পড়তা বেঁচে থাকার হার:

  • কিছু ক্যান্সারে চিকিৎসা নিলে ৫-১০ বছর বা তারও বেশি বাঁচা সম্ভব।
  • উন্নত পর্যায়ে (Stage 4) ধরা পড়লে সাধারণত গড় আয়ুষ্কাল ৬ মাস থেকে ৫ বছর হতে পারে, তবে এটি ব্যক্তিভেদে পরিবর্তিত হয়।

সঠিক তথ্যের জন্য ডাক্তার বা অনকোলজিস্টের (ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ) পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে ভালো।

ক্যান্সার একটি মারাত্মক রোগ, এমনটা অনেকেই মনে করেন। আসলে সব ধরনের ক্যান্সার মারাত্মক না। তবে বেশিরভাগ ক্যান্সার মারাত্মক। একজন ক্যান্সার রোগি কতদিন বাঁচবে তা নির্ভর করে অনেক কিছুর উপর।

যেমন ক্যান্সারের ধরন, স্টেজ (অর্থাৎ ক্যান্সার কতটা ছড়িয়েছে), রোগীর বয়স, চিকিৎসার প্রকার, শারীরিক অবস্থা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে। কিছু ক্যান্সার দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং অন্য কিছু ধীরগতিতে বাড়ে, তাই চিকিৎসা এবং প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী জীবনকাল ভিন্ন হতে পারে।

আরও পড়ুন
আইসিইউ থেকে পালালেন ‘কোমা’য় থাকা রোগী, ফাঁস করলেন হাসপাতালের ভয়ঙ্কর সব তথ্য
আইসিইউ থেকে পালালেন ‘কোমা’য় থাকা রোগী, ফাঁস করলেন হাসপাতালের ভয়ঙ্কর সব তথ্য
০৯ মার্চ, ২০২৫

বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালগুলোর দেওয়া কিছু সাধারণ তথ্য অনুযায়ী:

ক্যান্সারের ধরন: ক্যান্সারের ধরন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যেমন স্তন ক্যান্সার, প্রস্টেট ক্যান্সার, বা ত্বকের ক্যান্সার নির্দিষ্ট চিকিৎসা এবং নিরীক্ষণের মাধ্যমে বেশ কয়েক বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকা সম্ভব হতে পারে। তবে, কিছু অন্যান্য ক্যান্সার যেমন প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার বা লাং ক্যান্সার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং রোগীর জীবনকাল তুলনামূলকভাবে কম হতে পারে।

স্টেজ: ক্যান্সার যখন প্রথমে ধরা পড়ে এবং তার পরিমাণ কতটা ছড়িয়ে গেছে তাও গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম বা দ্বিতীয় স্টেজের ক্যান্সার আরও ভালোভাবে চিকিত্সা করা সম্ভব, আর তৃতীয় বা চতুর্থ স্টেজে ক্যান্সারের ছড়িয়ে পড়া পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।

চিকিৎসা: সঠিক সময়ে ডায়াগনোসিস এবং চিকিৎসা শুরু হলে, যেমন কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি, অস্ত্রোপচার, অথবা ইমিউন থেরাপি, রোগী অনেক সময় দীর্ঘকাল বাঁচতে পারেন।

ক্যান্সার হলে রোগী কেন মারা যায়?

চিকিৎসকদের মতে, ক্যান্সার হলো শরীরের একটি পরগাছার মতো। শরীরের একটি স্বাভাবিক কোষ কোন কারণে কোনভাবে পরিবর্তন হয়ে ক্যান্সার কোষে রুপান্তর হয়। তারপর এগুলোর একটা থেকে দুইভাগ হয়ে দুইটা, চারটা, ষোলটা, চৌষট্টিটা, এইভাবে অসংখ্য কোষ তৈরি হয়ে টিউমার আকার ধারন করে। যে কারণে স্বাভাবিক কোষ ক্যান্সার কোষে রুপান্তর হয় সেই কারনটি উঠিয়ে নিলেও ক্যান্সার কোষ তার নিজস্ব ক্ষমতা বলে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ঔষধ প্রয়োগ করে ক্যান্সার সেল মেরে ফেলা যায়। সাথে স্বাভাবিক কোষেরও মৃত্যু হতে পারে। ক্যান্সার কোষ বিভিন্ন পথে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে বাসা বাঁধতে থাকে। শরীরের পুষ্টিতে ভাগ বসায়। তাই, রোগী রুগ্ন হতে থাকে। ক্যান্সার স্থান থেকে রক্তক্ষরণ হয়ে রোগী রক্ত শুন্য হয়ে পড়ে। ক্যান্সার কোষ থেকে সাইটোকাইন নিঃসৃত হয়ে রোগীর ক্ষুধামান্দ ও স্বাভাবিক কোষের ক্ষতি করতে থাকে। রোগী শুকিয়ে যায়। ক্যান্সার স্থানে ঘা হয়ে পঁচে দিয়ে দুর্ঘন্ধ ছড়ায়। মাছি বসে ডিম দিয়ে পোকা ফেলে। লাংস, লিভার ও ব্রেইনে ছড়িয়ে পড়ে মৃত্যু ত্বরান্বিত করে। মুখে ও খাদ্যনালীতে ক্যান্সার হলে খাদ্য গিলতে না পেরে অনাহারে রোগী মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। পায়ু পথে ক্যান্সার হলে পায়খানা বন্ধ হয়ে রোগী মারা যায়।

আরও পড়ুন


পাইলস কেন হয়, লক্ষণ কী?
পাইলস কেন হয়, লক্ষণ কী?
০১ মার্চ, ২০২৫

তবে চিকিৎসকরা বলেন, রোগ ধরা পড়ার পর চিকিৎসা দিলে এক রকম পরিনতি না দিলে আরেক রকম পরিনতি। যদি সম্ভব হয় ক্যান্সার অংশটুকু আশেপাশের কিছু ভালো অংশসহ অপারেশন করে ফেলে দেয়া হয়। এটাকে বলা হয় সার্জারি। রগে ইনজেকশন দিয়ে ও মুখে ঔষধ সেবন করে ক্যান্সার কোষ মেরে ফেলা হয়। এটাকে বলা হয় কেমোথেরাপি। অনেকসময় সার্জারি করার আগে ক্যান্সার কোষগুলোকে আধমরা করার জন্য কেমোথেরাপি দিয়ে নেয়া হয়। সার্জারি করার উপযোগী না হলে সরাসরি কেমোথেরাপি দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। কোন কোন জাতের ক্যান্সার আছে রেডিওথেরাপি দিলে তারাতাড়ি ক্যান্সার কোষ মারা যায় এগুলোকে রেডিওসেন্সিটিভ ক্যান্সার বলা। এগুলো রেডিওথেরাপি দিয়ে নির্মূল করা যায়। কাজেই, যখন যে পদ্ধতিতে চিকিৎসা দিতে হবে তখন সে পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারলে রোগী সেরে উঠবে, না পারলে পরিণতি খারাপের দিকে যাবে। সার্জনের দক্ষতার কমবেশি আছে। যার সার্জনের দক্ষতা ভালো তার পরিণতিও ভালো, না হলে খারাপ। শুধু সার্জনই না, প্যাথলজিস্ট তেমন দক্ষ না হলে ডায়াগনোসিস ও গ্রেড সঠিক হবে না। পরিণতিও ভালো হবে না। যিনি কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি দেবেন তার দক্ষতার উপরও রোগীর পরিণতি নির্ভর করবে।

সুতরাং, ক্যান্সারের জীবনকাল রোগী এবং ক্যান্সারের ধরন অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। তবে, আধুনিক চিকিৎসা এবং গবেষণার অগ্রগতির কারণে অনেক ক্যান্সার রোগী এখন ভালো চিকিৎসার মাধ্যমে দীর্ঘ সময় বেঁচে থাকছেন। ঔষধের ধরনের উপরও চিকিৎসার ফলাফল নির্ভর করে থাকে। তাই ভালো ঔষধ খেলে তারাতাড়ি ভালো হবার সম্ভাবনা রয়েছে ক্যান্সার রোগীর।

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours