ফজিলতপূর্ণ যেসব দোয়া পড়তে পারেন | ফজিলতপূর্ণ কয়েকটি দোয়া ও আমল!

Estimated read time 1 min read

ফজিলতপূর্ণ যেসব দোয়া পড়তে পারেন 

রাসুলুল্লাহ (সা.) যখনই কোনো কঠিন সমস্যা বা বিপদের সম্মুখীন হতেন, তখনই আল্লাহর কাছে একান্তভাবে প্রার্থনা করতেন। বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়, এমন অনেক দোয়া পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। দোয়াগুলো ছোট, সহজে মুখস্থও করা যায়। দেহ সজীব ও প্রাণবন্ত রাখার জন্য যেমন খাবার বা আহারের প্রয়োজন, তেমনি কলব বা রুহকে জীবিত রাখার জন্যও খাবারের প্রয়োজন হয়।

আর রুহ বা কলবের সেই খাবার হলো আল্লাহর জিকির করা। ইরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং তোমরা আমাকেই স্মরণ করো, আমিও তোমাদের স্মরণ করব। আর তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞ হও এবং অকৃতজ্ঞ হোয়ো না। ’ (সুরা আল-বাকারা, আয়াত: ১৫২)।
 (১) ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺗَﻘَﺒَّﻞْ ﻣِﻨَّﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟﺴَّﻤِﻴﻊُ ﺍﻟﻌَﻠِﻴﻢُ (রাব্বানা তাক্বাব্বাল মিন্না ইন্নাকা আনতাস সামিউল আলিম) অর্থঃ হে আমাদের প্রভু প্রতিপালক! আমাদের প্রচেষ্টাকে কবুল কর। নিশ্চয় তুমি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী!

(২) ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَﺍﺟْﻌَﻠْﻨَﺎ ﻣُﺴْﻠِﻤَﻴْﻦِ ﻟَﻚَ ﻭَﻣِﻦ ﺫُﺭِّﻳَّﺘِﻨَﺎ ﺃُﻣَّﺔً ﻣُّﺴْﻠِﻤَﺔً ﻟَّﻚَ ﻭَﺃَﺭِﻧَﺎ ﻣَﻨَﺎﺳِﻜَﻨَﺎ ﻭَﺗُﺐْ ﻋَﻠَﻴْﻨَﺂ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧﺖَ ﺍﻟﺘَّﻮَّﺍﺏُ ﺍﻟﺮَّﺣِﻴﻢُ (রাব্বানা ওয়াজআলনা মুসলিমাইনি লাকা ওয়া মিন যুররিইয়াতিনা উম্মাতাম মুসলিমা তাল্লাকা ওয়া আরিনা মানা ছিকানা ওয়া তুবআলাইনা ইন্নাকা আনতাত্তাওয়াবুর রাহিম। ) অর্থঃহে আমাদের প্রভু প্রতিপালক! আমাদেরকে আত্মসমর্পনকারী বানাও এবং আমাদের বংশধর থেকেও একটি আত্মসমর্পনকারী উম্মত সৃষ্টি করো। আমাদেরকে তোমার ইবাদতের পদ্ধতি শিক্ষা দাও এবং আমাদের প্রতি সদয় দৃষ্টিপাত করো। কারণ তুমিই পুনঃ পুনঃ সদয় দৃষ্টিপাতকারী, পরম দয়াময়।

(৩) ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﺁﺗِﻨَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﺣَﺴَﻨَﺔً ﻭَﻓِﻲ ﺍﻵﺧِﺮَﺓِ ﺣَﺴَﻨَﺔً ﻭَﻗِﻨَﺎ ﻋَﺬَﺍﺏَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ (রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াকিনা আযাবান্নার) অর্থঃহে আমাদের প্রভু প্রতিপালক! আমাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতের সর্বোত্তম কল্যাণ দান করো এবং আগুনের আযাব হতে আমাদের রক্ষা করো।

(৪) ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻻَ ﺗُﺆَﺍﺧِﺬْﻧَﺎ ﺇِﻥ ﻧَّﺴِﻴﻨَﺎ ﺃَﻭْ ﺃَﺧْﻄَﺄْﻧَﺎ (রাব্বানা লা তুআখিযনা ইন নাছিনা আও আখতানা) অর্থঃহে আমাদের প্রভু প্রতিপালক! তুমি আমাদের পাকড়াও করোনা যদি আমরা ভুলে যাই ও ভুলবশত ত্রুটিবিচ্যুতি করে বসি। (৫) ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَﻻَ ﺗَﺤْﻤِﻞْ ﻋَﻠَﻴْﻨَﺎ ﺇِﺻْﺮًﺍ ﻛَﻤَﺎ ﺣَﻤَﻠْﺘَﻪُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻣِﻦ ﻗَﺒْﻠِﻨَﺎ (রাব্বানা ওয়ালা তাহমিল আলাইনা ইসরান কামা হামালতাহু আ’লাল্লাযিনা মিন ক্বাবলিনা) অর্থঃহে আমাদের প্রভু প্রতিপালক! তুমি আমাদের ওপর এরুপ দায়িত্বভার অর্পন করোনা যেরুপ দায়িত্বভার অর্পন করেছিলে আমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর!

(৬) ﺭَﺑَّﻨَﺎ ﻭَﻻَ ﺗُﺤَﻤِّﻠْﻨَﺎ ﻣَﺎ ﻻَ ﻃَﺎﻗَﺔَ ﻟَﻨَﺎ ﺑِﻪِ ﻭَﺍﻋْﻒُ ﻋَﻨَّﺎ ﻭَﺍﻏْﻔِﺮْ ﻟَﻨَﺎ ﻭَﺍﺭْﺣَﻤْﻨَﺎ ﺃَﻧﺖَ ﻣَﻮْﻻَﻧَﺎ ﻓَﺎﻧﺼُﺮْﻧَﺎ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟْﻘَﻮْﻡِ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮِﻳﻦَ (রাব্বানা ওয়ালা তুহাম্মিলনা মা লা ত্বাকাতা লানা বিহি। ওয়া’ফুআন্না ওয়াগফিরলানা ওয়ারহামনা আনতা মাওলানা ফানছুরনা আলাল ক্বাওমিল কাফিরীন। ) অর্থঃহে আমাদের প্রভু প্রতিপালক! তুমি আমাদের ওপর এমন বোঝা চাপিওনা যা বহন করার শক্তি আমাদের নাই। তুমি আমাদের মার্জনা করো, আমাদের ওপর ক্ষমা করো, আমাদের প্রতি রহম করো। (কারণ) তুমিই আমাদের অভিভাবক। সুতরাং, কাফেরদের বিরুদ্ধে তুমি আমাদের সাহায্য করো।

নবী করিম (সা.) বলেছেন, সর্বশ্রেষ্ঠ জিকির হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া হলো ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’। আরও পড়তে পারেন সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার।

আল্লাহর কাছে কোনো দোয়া করার আগে প্রথমে দরুদ পড়া এবং দরুদ পড়ে দোয়া শেষ করা। কেননা আল্লাহ উভয় দরুদ কবুল করেন।

ফজিলতপূর্ণ কয়েকটি দোয়া ও আমল!

দোয়া শব্দের অর্থ আল্লাহকে ডাকা, কিছু চাওয়া, প্রার্থনা করা অর্থাৎ বিনয়ের সঙ্গে মহান আল্লাহর কাছে কল্যাণ ও উপকার লাভের উদ্দেশ্যে এবং ক্ষতি ও অপকার থেকে বেঁচে থাকার জন্য প্রার্থনা করাই হলো দোয়া।

এই দোয়াকে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা ইবাদত হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং সাহায্য লাভের মাধ্যম বানিয়েছেন। তাইতো পবিত্র কোরআন ও হাদীসে নবী করিম (সা.) এর মাধ্যমে মানুষকে দোয়ার বিষয়ে নির্দেশ তথা তাক্বীদ দিয়েছেন। 

আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব, যারা আমার ইবাদতে অহংকার করে তারা অচিরেই জাহান্নামে প্রবেশ করবে এবং লাঞ্ছিত হবে।’ (সূরা মু’মিন, আয়াত-৬০)

আল্লাহ তায়ালা মানুষকে কোনো মাধ্যম ছাড়াই রহমত বরকত মাগফেরাত দেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তাই আল্লাহর ঘোষণা অনুযায়ী তাকে ডাকলেই আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে সব কল্যাণ দান করবেন।

তবে আল্লাহ তায়ালাকে ডাকতে, তাঁর কাছে কোনো কিছু চাইতে কিংবা তার কাছে কোনো কল্যাণ বা নেয়ামত পেতে হলে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। যা আহ্বানকারী বা প্রার্থনাকারীর জন্য আবশ্যক। হাদিসে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ক্ষেত্রে ২টি বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। তাহলো-

‘হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মুসলমান যখন অন্য কোনো মুসলমানের জন্য দোয়া করে, যার মধ্যে কোনোরূপ গোনাহ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা থাকে না; আল্লাহ তায়ালা এ দোয়ার বিনিময়ে তাকে ৩টির যেকোনো একটি দান করে থাকেন-

> তার দোয়া দ্রুত কবুল করে থাকেন;
> তার প্রতিদান আখেরাতে দেয়ার জন্য রেখে দেন; কিংবা
> তার থেকে অনুরূপ আরেকটি কষ্ট দূর করে দেন।

প্রিয়নবী (সা.) এর এ কথা শুনে সাহাবাগণ বললেন, তাহলে আমরা বেশি বেশি দোয়া করব। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আল্লাহ আরো বেশি দোয়া কবুলকারী।’ (মুসনাদে আহমাদ, মিশকাত)

এ হাদিসে বর্ণিত উল্লেখিত শর্তসমূহের সঙ্গে অন্য হাদিসে বর্ণিত ৩টি শর্ত রয়েছে। যা শুধু দোয়া কবুল নয় বরং সব ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত করা হয়েছে। তাহলো-

> দোয়াকারীর খাদ্য, পানীয় ও পোশাক পবিত্র হতে হবে। (অর্থাৎ হারাম অর্থ ব্যয়ে না হওয়া)
> দোয়া কবুল হওয়ার জন্য ব্যস্ত না হওয়া।
> দোয়ার সময় উদাসিন বা বেখেয়াল না হওয়া এবং দোয়া কবুলের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী হওয়া।’ (মুসনাদে আহমাদ, মুসলিম, মিশকাত ও তিরমিজি)

মনে রাখা জরুরি:
আল্লাহর কাছে দোয়া করতে বা ধরনা দিতে কোনো মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না বরং নিজের অন্যায় বা গোনাহের জন্য নিজেই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। যে ব্যক্তি ক্ষমার মানসিকতা নিয়ে আল্লাহকে ডাকবে আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করে রহমত দ্বারা প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন। এমনটিই আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা।

সুতরাং উল্লেখিত হাদিসের শর্তানুযায়ী আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রেখে, ধীররস্থিরভাবে হালাল খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে দোয়া করা জরুরি।

কয়েকটি ফজিলতপূর্ণ  আয়াত ও দোয়া নিচে উল্লেখ করা হলো-
   
(১) বিভিন্ন ধরনের বালা-মুসিবত দূর করার আমল:

দোয়া:

لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ

উচ্চারণ:
 
লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ্ জালিমীন।

অর্থ: 

আপনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই। আমি আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। অবশ্যই আমি পাপী। (সূরা: আল আম্বিয়া, আয়াত: ৮৭)

ফজিলত:

(ক) এ আয়াতে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, আমি নবী ইউনুসের প্রার্থনা মঞ্জুর করেছি। তাকে দু:খ থেকে মুক্তি দিয়েছি। অনুরূপভাবে যে মুমিনরা এ দোয়া পড়বে আমি তাদেরও বিভিন্ন বালা-মুসিবত থেকে মুক্তি দিব। -(সূরা: আল আম্বিয়া, আয়াত: ৮৮)

(খ) হজরত নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হজরত ইউনুস (আ.) এর ভাষায় দোয়া করবে, সে যে সমস্যায়ই থাকুক আল্লাহ তায়ালা তার ডাকে সাড়া দিবেন। (তিরমিজি)

(গ) হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরো ইরশাদ করেছেন, আমার ভাই ইউনুসের দোয়াটি খুব সুন্দর। এর প্রথম অংশে আছে কালিমায়ে তায়্যিবা। মাঝের অংশে আছে তাসবিহ। আর শেষের অংশে আছে অপরাধের স্বীকারোক্তি। যে কোনো চিন্তিত, দু:খিত, বিপদগ্রস্থ ব্যক্তি প্রতি দিন এ দোয়া তিন বার পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা তার ডাকে সাড়া দিবেন। (কানজুল উম্মাল)

আমল: 

কঠিন বালা-মুসিবত দূর করার জন্য বর্ণিত দোয়া বা আয়াতটি এক লক্ষ চব্বিশ হাজার পাঠ করে আল্লাহর কাছে দোয়া করলে, ওই দোয়া হয়।

(২) শিশুর জিদ দূর করার আমল:

দোয়া:

أَفَغَيْرَ دِينِ اللَّهِ يَبْغُونَ وَلَهُ أَسْلَمَ مَنْ فِي السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ طَوْعًا وَكَرْهًا وَإِلَيْهِ يُرْجَعُونَ

উচ্চারণ: 

আফাগাইরা দীনিল্লাহি ইয়াবগুনা ওয়ালাহু আসলামা মান ফিস্ সামাওয়াতি ওয়াল আরদি তাউআউ ওয়া কারহান; ওয়া ইলাইহি ইয়ুরজাঊন।

অর্থ: 

তারা কি আল্লাহর দেয়া জীবন ব্যবস্থার পরিবর্তে অন্য জীবন ব্যবস্থা তালাশ করছে? নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে যা কিছু আছে স্বেচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক তার অনুগত হবে। সবাই তার কাছে ফিরে যাবে। -(সূরা: আল ইমরান, আয়াত: ৮৩)

ফজিলত: 

যে ব্যক্তির সন্তান বা প্রাণী তাকে কষ্ট দেয়, সে যেন তার কানে সূরা আল ইমরানের ৮৩ নং আয়াত পড়ে। (তাবারানি)

আমল: 

সন্তানের অতিরিক্ত জিদ থাকলে, কথা না শোনলে, কথা না মানলে প্রতিদিন ৭ বার সন্তানের কপালের উপরিভাগের চুলে হাত রেখে এ আয়াতখানা পাঠ করে তার চেহারা ও কানে ফুঁ দিলে- জিদ কমে আসে। এ আমল নূন্যতম ২১ দিন লাগাতার করতে হয়।

(৩) শ্রেষ্ঠ দোয়া:

দোয়া: 

رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

উচ্চারণ: 

রাব্বানা আতিনা ফিদ্ দুনইয়া হাসানাহ্, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাহ্। ওয়াকিনা আজাবান্নার।

অর্থ: 

হে আমার প্রভু! আমাকে দুনিয়াতে সুখ দান কর, আখেরাতেও সুখ দান কর এবং আমাকে জাহান্নাম থেকে বাঁচাও। (সূরা: আল বাকারা, আয়াত: ২০১)

ফজিলত: 

এ দোয়াকে সর্বশ্রেষ্ঠ দোয়া বলা হয়ে থাকে। নবী করিম (সা.) এ দোয়াটি সবচেয়ে বেশি পাঠ করতেন।

বিশিষ্ট তাবেয়ি হজরত কাতাদাহ (রহ.) সাহাবী হজরত আনাস (রা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, নবী করিম (সা.) কোন দোয়া বেশি করতেন? উত্তরে সাহাবী হজরত আনাস (রা.) উপরোক্ত দোয়ার কথা জানালেন। তাই হজরত আনাস (রা.) নিজে যখনই দোয়া করতেন তখনই দোয়াতে এই আয়াতকে প্রার্থনারূপে পাঠ করতেন। এমনকি কেউ তার কাছে দোয়া চাইলে তিনি তাকে এ দোয়া দিতেন। (সহীহ মুসলিম)

হজরত আনাস (রা.) আরো বলেন, আল্লাহ তায়ালা এ দোয়ায় দুনিয়া ও আখেরাতের সকল কল্যাণ ও জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের প্রার্থনা একত্রিত করে দিয়েছেন।

(৪) দ্বীনদার স্ত্রী লাভের আমল:

দোয়া: 

رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا

উচ্চারণ: 

রাব্বানা হাবলানা মিন আজওয়াজিনা ওয়া জুররি-ইয়্যাতিনা কুররাতা আয়ুনিওঁ-ওয়াজআলনা লিল মুত্তাকিনা ইমামা।

অর্থ: 

হে আমার প্রভু! স্ত্রী ও সন্তানদের দ্বারা আমার চোখ শীতল কর। আমাকে পরহেজগারদের আদর্শ কর। (সূরা: ফোরকান, আয়াত: ৭৪)

আমল: 

যারা বিয়ে করেননি তারা প্রত্যেক নামাজের (তা ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত, নফল যেকোনো নামাজ হোক) শেষ বৈঠকে দোয়ায়ে মাছূরা পড়ার পর কোরআনে বর্ণিত এই আয়াতখানা পাঠ করে সালাম ফিরাবেন। বিয়ের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে এ আমল করলে আশা করা যায়, আল্লাহভক্ত দ্বীনদার, পরহেজগার ও আদর্শ স্ত্রী জুটবে।

আর যারা বিয়ে করেছেন তারা স্ত্রী ও সন্তানদের দ্বীনদার করার জন্য, তাদের আদর্শবান করে গড়ে তোলার জন্য- প্রতিবার দোয়ায় এ আয়াত পাঠ করলে বিশেষ উপকার লাভ হয়।

(৫) রিজিক বৃদ্ধির আমল:

দোয়া: اللَّهُ لَطِيفٌ بِعِبَادِهِ يَرْزُقُ مَنْ يَشَاءُ وَهُوَ الْقَوِيُّ الْعَزِيزُ

উচ্চারণ: 

আল্লাহু লাতীফুম্ বি-ইবাদিহি ইয়ারজুকু মাইয়্যাশায়ু, ওয়া হুয়াল কাভিয়্যুল আজিজ।

অর্থ: 

আল্লাহ তায়ালা নিজের বান্দাদের প্রতি মেহেরবান। তিনি যাকে ইচ্ছা রিজিক দান করেন। তিনি প্রবল, পরাক্রমশালী। (সূরা: শুরা, আয়াত: ১৯)

আমল: 

যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে, একনিষ্ঠতার সঙ্গে ৭০ বার এ আয়াত পড়বে, সে সর্বদা রিজিকের সঙ্কট থেকে হেফাজতে থাকবে।

(৬) স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির আমল:

স্মৃতিশক্তির দুর্বলতার কারণে অনেক শিক্ষার্থীকেই নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী নিজে অথবা তার পিতা-মাতা প্রতিদিন প্রত্যেক নামাজের পর সূরা আলাম নাশরাহ পড়ে তার বুকে ফুঁ দিবে। সূরা পাঠ করার শুরু ও শেষে একবার করে দরূদ শরিফ পড়বে। যদি শিক্ষার্থী সমঝদার হয়, তবে প্রতিবার পড়তে বসার সময়, প্রত্যেক ক্লাসের শুরুতে, শিক্ষার প্রতিটি আসরের শুরুতে আগে-পরে দরূদ শরিফসহ এ সূরা পড়ে নিজের বুকে ফুঁ দিবে। যে নিয়মিত এ আমল করবে, আল্লাহর রহমতে তার স্মৃতিশক্তি বাড়বে।

দোয়ার জন্য হাদিসে বিশেষ কিছু স্থান ও সময়ের ব্যাপারে তাকীদ এসেছে, যেগুলো সংক্ষেপে বর্ণিত হলো:

(১) কোরআনী দোয়া ব্যতিরেকে হাদিসে বর্ণিত দোয়া সমূহের মাধ্যমে সিজদায় দোয়া করা
(২) শেষ বৈঠকে তাশাহ্হুদ ও সালামের মধ্যবর্তী সময়ে
(৩) জুমার দিনে ইমামের মিম্বরে বসা হতে সালাম ফিরানো পর্যন্ত সময়কালে
(৪) রাত্রির নফল সালাতে
(৫) সিয়াম অবস্থায়
(৬) রামাজানের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ বেজোড় রাত্রিগুলোতে
(৭) সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে উঠে বায়তুল্লাহর দিকে মুখ করে দু’হাত উঠিয়ে
(৮) হজের সময় আরাফাতের ময়দানে দু’হাত উঠিয়ে
(৯) মাশ‘আরুল হারাম অর্থাৎ মুযদালিফা মসজিদে অথবা বাইরে স্বীয় অবস্থান স্থলে ১০ই জিলহাজ্জ ফজরের সালাতের পর হতে সূর্যোদয়ের আগ পর্যন্ত দোয়া করা
(১০) ১১, ১২ ও ১৩ জিলহাজ্জ তারিখে মিনায় ১ম ও ২য় জামরায় কংকর নিক্ষেপের পর একটু দূরে সরে গিয়ে দু’হাত উঠিয়ে দোয়া করা
(১১) কাবাগৃহের তাওয়াফের সময় রুকনে ইয়ামানী ও হাজারে আসওয়াদের মধ্যবর্তী স্থানে।
(১২) ‘কারোর পিছনে খালেছ মনে দোয়া করলে, সে দোয়া কবুল হয়। সেখানে একজন ফেরেশতা নিযুক্ত থাকেন। যখনই ওই ব্যক্তি তার ভাইয়ের জন্য দোয়া করে, তখনই উক্ত ফেরেশতা ‘আমীন’ বলেন এবং বলেন তোমার জন্যও অনুরূপ হোক’। (মুসলিম) 

মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে কোরআনের ঘোষণা অনুযায়ী হাদিসের ওপর আমল সাপেক্ষে আল্লাহর কাছে যথাযথভাবে ধরনা দেয়ার মাধ্যমে নিজেদের প্রয়োজন পূরণে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমীন।

Chat On WhatsApp

Please Contact with us for more details.
Our Services

Phone : +8801566058831
WhatsApp :�wa.me/8801933307999
Skype : azadarch
Our Website : www.azadservice.com
Telegram for more information : https://t.me/Azadservice
Email US : azadarc@gmail.com
Youtube :� https://www.youtube.com/@DropshippingService?sub_confirmation=1
Virtual Assistant : www.azadservice.com/category/virtual-assistant/
Facebook Groups : https://www.facebook.com/groups/854505676275341/
Facebook Page : https://www.facebook.com/independentservice.today
Linkdin :� https://www.linkedin.com/in/azadservice/
Instagram : https://www.instagram.com/azadservicebd/

Pinterest : https://www.pinterest.com/azadservice/

Twitter.: https://twitter.com/azadservicebd

Tiktok : https://www.tiktok.com/@azadservices

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours